पोस्ट विवरण
सुने
रोग
मूँगफली
কৃষক ডাক্তার
DeHaat Channel
28 Mar
Follow

বাদাম চাষের রোগ ও পোকার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি / Groundnut: Major diseases and their management

হুগলি জেলায় প্রাক-খরিফ মরসুমে চিনাবাদামের চাষ করে থাকেন অনেকে। রাজ্যের অন্যত্রও খরিফ ও রবি মরসুমের তুলনায় ফাল্গুন-চৈত্র মাসে চিনাবাদাম চাষের চল বেশি। শুধু অর্থকরী ফসল হিসাবেই নয়, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতেও এর অসীম ভূমিকা। আলু তুলে বাদাম চাষ।

হুগলি জেলায় প্রাক-খরিফ মরসুমে চিনাবাদামের চাষ করে থাকেন অনেকে। রাজ্যের অন্যত্রও খরিফ ও রবি মরসুমের তুলনায় ফাল্গুন-চৈত্র মাসে চিনাবাদাম চাষের চল বেশি। শুধু অর্থকরী ফসল হিসাবেই নয়, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতেও এর অসীম ভূমিকা। গম, তিল, অড়হর ও আউশ ধানের সঙ্গে ‘সাথী ফসল’ হিসাবে এই চাষ করা যায়। একক ভাবে চাষ করেও ভাল লাভ হয়। বাদামের অন্তর্বীজ ফসফরাস ও ভিটামিনে সমৃদ্ধ। বিভিন্ন খাদ্যগুণের মধ্যে বাদামে রয়েছে ২৬.৭ শতাংশ প্রোটিন, ৪০.১ শতাংশ তেল, কার্বোহাইড্রেট- ২০.৩ শতাংশ, আঁশ ৩.১ শতাংশ, খনিজ পদার্থ ১.৯ শতাংশ এবং জলীয় অংশ ৭.৯ শতাংশ। ১০০ গ্রাম বাদাম থেকে প্রায় ৫৪৯ ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। বাদামের প্রোটিন, দুধ, ডিম এবং মাংসের মতই পুষ্টিকর এবং সহজ পাচ্য। জল নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত নিচু বা উঁচু এমন কি সমতল টিলা ভূমিতেও জৈব সার প্রয়োগের মাধ্যমে বৃষ্টির সুযোগ নিয়ে সহজেই বাদামের চাষ করা চলে ।

রোগ পোকা: রোগ পোকার আক্রমণের বিষয়ে, সুসংহত রোগ পোকার দমন ব্যবস্থাপনা (আই পি এম) র পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা উচিৎ এবং বিশেষ কয়েকটি রোগ বা পোকা ছাড়া আর্থিক ক্ষতির সীমা বিবেচনা করেই রাসায়নিক কীটনাশক বা রোগ নাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাদামের বিভিন্ন রোগের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে  প্রধানত : টিক্কা (Tikka Disease) এবং গোড়া পচা (Colar rot) রোগ বেশী দেখা যায়।

টিক্কা রোগ (Tikka Disease) : টিক্কা রোগে পাতায় উজ্জ্বল হলদে রং বেষ্টিত গাঢ় বাদামী রং এর দাগ পড়ে। পরে এই রোগ ডাটা, কাণ্ড এবং বোটায়ও ছড়িয়ে যায়। গাছের পাতা ঝড়ে পড়তে শুরু করে, কচি ডাটাগুলি শুকিয়ে যায় ফলে ফলনও কমে যায়।

প্রয়োজনে রোগ প্রতিকারে প্রতি লিটার জলে ১ মিঃ গ্রাঃ পরিমাণ কার্বেনডাজিম/ব্যাভিস্টিন অথবা ৩ গ্রাম পরিমাণ ডায়থেন এম-৪৫ এই হারে মিশিয়ে সমস্ত গাছে ভালভাবে  স্প্রে করা  যেতে পারে অথবা স্প্রে করুন ,কার্বেন্ডাজিম ১২% + ম্যানকোজেব ৬৩% (৭৫% WP) ২.৫গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন। ব্যবহার করুন (দেহাত - Saabu )

গোড়া পচা (Colar rot): এই রোগ গাছের গোড়ার মাটি সংলগ্ন অংশে কাল দাগ পড়ে। পরে, পচে গাছ বা চারা মারা যায়।  এই রোগের প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়াই লাভজনক। ক্যাপ্টন (৮০ শতাংশ ডাব্লিউ পি) প্রতি কেজি বীজের জন্য ৪ গ্রাম বা কার্বেনডাজিম/ব্যাভিষ্টীন প্রতি কেজি বীজের জন্য ২ গ্রাম এই হারে মিশিয়ে বীজ বপনের আগেই বীজ শোধন করে নিলে রোগের আক্রমনের সম্ভাবনা কমে যায়।  প্রয়োজনে রোগ প্রতিকারে  স্প্রে করুন কপার অক্সিক্লোরাইড ৫০% WP  ২ গ্রাম  প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন অথবা স্প্রে করুন থিওফানেট মিথাইল ৭০% WP ১ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন।

পোকার আক্রমন: পশ্চিমবঙ্গে চীনাবাদামের বিভিন্ন পোকার আক্রমণের মধ্যে উঁই পোকা (Termites), গুঁয়ো পোকা/ লেদা পোকা, হোয়াইট গ্রাব (White Grub), লিফ মাইনার (Leaf miner), জাব পোকা (Aphid) ইত্যাদি-লক্ষ্য করা যায়।

উঁই পোকা: বীজ বপনের পর থেকেই পোকার আক্রমণে বীজ ও গাছের মূল ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।  উঁই পোকা চারা গাছের শিকড় ও বাকল খেয়ে ফেলে।  অনেক সময় চারা গাছের মূল শিকড়ের বাকল গোলাকার (রিং আকারে) করে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে। ফলে জল  ও খাদ্য সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে গাছ শুকিয়ে মরে যায়। অনেক সময় উঁই পোকা গাছের ক্ষতিগ্রস্ত শিকড়ের মধ্যে দিয়ে সুরঙ্গ করে কান্ডের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং ভিতরের কাষ্ঠল অংশ খেয়ে ফেলে। শুষ্কতার হাত হতে বাঁচার জন্য এরা নিজ মুখ নিঃসৃত লালা ও মাটি দিয়ে গাছের কান্ড বা বাকলের উপর চলাচলের জন্য সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করে এবং বাকল ও কান্ড  চিবিয়ে খায়। চারা গাছের শিকড় ও বাকল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে গাছ শুকিয়ে মরে যায়।প্রতিকারের চেয়ে এখানে প্রতিরোধ ব্যবস্থাই ভাল।

জমি তৈরীর চাষের সময়েই প্রতি লিটার জলে ২.৫ মিঃ লিঃ ক্লোরোপাইরিফস (২০ E.C.)  ব্যবহার করুন ডাসবান একই হারে মিশিয়ে সমস্ত জমিতে ভালভাবে স্প্রে করে দিন ।

গুঁয়ো পোকা/ লেদা পোকা: মরশুমী বৃষ্টির পর অসংখ্য গুঁয়ো পোকা গাছের পাতা ইত্যাদি খেয়ে খুব ক্ষতি করে। ফলে ফলন খুব কমে যায়। এক সাথে অনেক পোকা পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে । ফলে পাতা জালের মত হয়ে যায়। বড় পোকা পাতায় বড় বড় ছিদ্র করেও ক্ষতি সাধন করে ।  কচি ও বয়স্ক সব পাতাই খেয়ে ফেলে। স্ত্রী মথ পাটের পাতার উল্টা পিঠে গাদা করে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার পর প্রায় ৬-৭ দিন পর্যন্ত বাচ্চাগুলো পাতার উল্টা দিকে দলবদ্ধভাবে থাকে। পরে এরা সব গাছে ছড়িয়ে পড়ে। দল বদ্ধভাবে থাকা অবস্থায় কীড়াগুলো পাতার সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে সাদা পাতলা পর্দার মতো করে ফেলে এবং আক্রান্ত পাতাগুলো দূর থেকেই সহজে দৃশ্যমান হয়। আক্রমণ ব্যাপক হলে এরা কচি ডগাও খেয়ে ফেলে ।

নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি :

বাদামের পাতায় ডিমের গাদা দেখলে ডিম সহ পাতা তুলে জমির বাইরে করতে হবে। আক্রমণের প্রথম পর্যায়ে যখন ডিম থেকে বের হওয়া কীড়াগুলো দলবদ্ধভাবে থাকে, তখন পোকাসহ পাতাটি তুলে জমির বাইরে ফেলে দিন। এই পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ইমামেকটিন বেনজোয়েট ৫% এসজি  ১ গ্রাম প্রতি ২ লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন । ব্যবহার করুন  (দেহাত - ইলিগো, ধানুকা - ই.এম. 1) অথবা  ক্লোরপিরিফস ৫০% + সাইপারমেথ্রিন ৫% (৫৫% ইসি) ১.৫ML প্রতি  লিটার জলে লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন।ব্যবহার করুন (দেহাত - C Square )

হোয়াইট গ্রাব: গাঢ় বাদামী প্রাপ্তবয়স্ক পোকা মাটিতে পুনঃপ্রবেশ করে লুকিয়ে ডিম পাড়ে। মহিলা ২০ - ৮০ টি সাদা, গোলাকার ডিম গুচ্ছে পাড়ে। ডিমের সময়কাল ৯-১১ দিন। গ্রাবগুলি সাদা এবং স্বচ্ছ। পোকার সাদা রং-এর গ্রাবগুলি গাছের মূল খেয়ে গাছকে মেরে ফেলে।  গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। গাছপালা শুকিয়ে যায় বা মরে যায়। শিকড় আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সাদা এবং মাংসল গ্রাব দ্বারা খেয়ে ফেলে। প্রতিকার হিসাবে প্রয়োজনে মনোক্রোটোফস (৪০ ই. সি) প্রতি লিটার জলে ১ মিঃ লিঃ বা ক্লোরোপাইরিফস (২০ ই. সি) প্রতি লিটার জলে ২.৫ মিঃ লিঃ এই হারে মিশিয়ে গাছের গোড়ার দিকে ভালভাবে ছিটিয়ে স্প্রে করুন।

নালীপোকা বা লিফ মাইনর পোকা:

হলুদাভ সাদা রঙের ক্ষুদ্র কীড়াপাতার দু ত্বকের মাঝে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি করে তার মধ্যে থাকে এবং সবুজ অংশ খেতে খেতে এগোয়। পাতার ওপর থেকে দেখলে পোকা খেয়ে-যাওয়া পথকে জালের বা ম্যাপের মতো মনে হবে। পাতা আলোয় ধরলে নালীর মধ্যে পোকা লক্ষ করা যাবে। আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায়। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে থায়ামেথক্সাম ০.৫ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন । ব্যবহার করুন (দেহাত Asear )বা অ্যাসিটামিপ্রিড ১গ্রাম প্রতি ৩  লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন । ব্যবহার করুন (টাটা - Manik )

জাব পোকা (Aphid) :

এরা পাতার রস চুষে খায় ফলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। পাতায় নিচে অসংখ্য পোকা দেখা যায় । পূর্ণ বয়স্ক ও বাচ্চা উভয়ই ক্ষতি করে । চারা গাছ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এরা পাতার রস খায় । আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয় । গাছের পাতা ওপর দিকে কুকড়ে যায়। গাছে নাড়া দিলে পোকা উড়ে যায় ।  এটি নিয়ন্ত্রণ করতে থায়ামেথক্সাম ১২.৬% + ল্যামডা সাইহালোথ্রিন ৯.৫% ZC  ১ ML প্রতি ২  লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন । ব্যবহার করুন (দেহাত- Entokill ) অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড ৭০% WG ৫গ্রাম প্রতি ১৫ লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন । ব্যবহার করুন ( বায়ার - Admire )

. কোন রোগ বা পোকা আপনার বাদাম ফসলকে ক্ষতি  করার সম্ভাবনা বেশি? মন্তব্যের মাধ্যমে আপনার উত্তর আমাদের বলুন. কৃষি সম্পর্কিত তথ্যের জন্য, আপনি দেহাত টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০-১০৩৬-১১ ০-এ যোগাযোগ করে বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। এছাড়াও, 'কিসান ডাক্তার' চ্যানেল অনুসরণ করে আপনি ফসলের সঠিক যত্ন এবং সুরক্ষার জন্য আরও তথ্য পেতে পারেন। এর সাথে, এই পোস্টটি লাইক এবং শেয়ার করে, আপনি এই তথ্যটি অন্য কৃষকদের কাছে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

সচরাচর কিছু জিজ্ঞাস্য | Frequently Asked Question

Q: টিক্কা রোগ  হলে কি ওষুধ দেওয়া যাবে ?

A: স্প্রে করুন কার্বেন্ডাজিম ১২% + ম্যানকোজেব ৬৩% (৭৫% WP) ২.৫গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন। ব্যবহার করুন (দেহাত - Saabu )

Q: গাছের গোড়া পচার জন্য কি ওষুধ স্প্রে করা জেতে পারে ?

A: স্প্রে করুন কপার অক্সিক্লোরাইড ৫০% WP  ২ গ্রাম  প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন অথবা স্প্রে করুন থিওফানেট মিথাইল ৭০% WP ১ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন।

Q: লেদা পোকার জন্য কি ওষুধ দেব ?

A: এই পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য ইমামেকটিন বেনজোয়েট ৫% এসজি  ১ গ্রাম প্রতি ২ লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন । ব্যবহার করুন  (দেহাত - ইলিগো, ধানুকা - ই.এম. 1) অথবা  ক্লোরপিরিফস ৫০% + সাইপারমেথ্রিন ৫% (৫৫% ইসি) ১.৫ML প্রতি  লিটার জলে লিটার জলে গুলে স্প্রে করুন।ব্যবহার করুন (দেহাত - C Square)

48 Likes
Like
Comment
Share
फसल चिकित्सक से मुफ़्त सलाह पाएँ

फसल चिकित्सक से मुफ़्त सलाह पाएँ